বিশেষ প্রতিবেদক:
তত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক প্রধান প্রয়াত বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি মুহম্মদ হাবিবুর রহমান বলেছিলেন-‘এতদঞ্চলে অশিক্ষার জন্য শিক্ষিত লোকরাই দায়ি। কেননা শিক্ষিত লোকরা একবার নগরে গেলে গ্রামে ফিরেন না। কিন্তু ব্যতিক্রম হচ্ছে প্রয়াত শিক্ষানুরাগি মঈনুদ্দিন আহমদের সন্তানরা। তারাই আজ গ্রামে নিজেদের অর্থায়নে গড়ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।’

২০১০ সালের এপ্রিলে প্রয়াত প্রধান বিচারপতি মুহম্মদ হাবিবুর রহমান যে প্রতিষ্ঠানটির উদ্ভোধনী অনুষ্টানের বক্তব্যে এমন কথা বলেছিলেন, সেই প্রতিষ্টানেই প্রথম বছরে ৬৭ জন শিক্ষার্থী এইচ,এস,সি পাশ করে ফলাফলে কক্সবাজারে দ্বিতীয় স্থান লাভ করেছে। এমন গর্বিত শিক্ষা প্রতিষ্টানটি হচ্ছে টেকনাফ সীমান্তের নাফ নদী তীরের মঈনুদ্দীন মেমোরিয়াল কলেজ।

২০১৫-১৬ সালে কলেজটিতে এইচ,এস,সি’র প্রথম ব্যাচের যাত্রা শুরু হয়।  রবিবার ঘোষিত এইচ,এস,সি’র ফলাফল হচ্ছে কলেজটির জন্য একটি মাইলফলক। কলেজের ৭৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৬৭ জনই উত্তীর্ণ হয়েছে। যদিওবা জিপিএ-৫ কেউ পায়নি তবুও কলেজের পাশের হার দাঁড়িয়েছে শতকরা ৯১.৫৬। কক্সবাজার সরকারি কলেজের পাশের হার হচ্ছে শতকরা ৯২ জন। এ হিসাবে মঈনুদ্দিন মেমোরিয়াল কলেজ জেলায় দ্বিতীয় স্থান লাভ করেছে।

কলেজটির প্রতিষ্ঠাতা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ব বিভাগের ডিন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্য ড. ফরিদ উদ্দিন আহমদ জানান, কলেজের ৪২ জন ছাত্রের মধ্যে ৩৫ জন পাশ করেছে। আর যে ৭ জন পরীক্ষার্থী পাশ করেনি তারা শুধু মাত্র ইংরেজি বিষয়েই খারাপ করেছে। তিনি জানান, কলেজের ৩২ জন ছাত্রীর মধ্যে সবাই পাশ করেছে। কলেজে বাণিজ্য বিভাগে পাশের হার হচ্ছে শতে শতভাগ।

টেকনাফের হ্নীলার বাসিন্দা মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগটক এবং বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগি প্রয়াত মঈনুদ্দিন আহমদের তিন সন্তান কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন হ্নীলায় দুই একর জমি দান করেন কলেজটির জন্য।

প্রয়াত শিক্ষানুরাগি মঈনুদ্দিন আহমদের জেষ্ট্য সন্তান ড. প্রফেসর ফরিদ উদ্দিন আহমদ জানান-‘আমাদের পৈত্রিক জমিতে নিজেদের অর্থায়নে পিতার নামেই কলেজটি গড়ে তোলা হয়েছে।’ বর্তমানে কলেজটি চলছে মঈনুদ্দিন ট্রাষ্টি বোর্ডের মাধ্যমে। আগামী ৫ আগষ্ট কলেজের এইচএসসি উত্তীর্ণদের বিদায় এবং নবীণদের বরণ অনুষ্ঠান অনুষ্তঠ হবে। এই অনুষ্টানে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের অংশ গ্রহণের কথা রয়েছে।